করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বড় শিল্প ও সেবা খাতে প্রথম মেয়াদে প্রণোদনা ঋণ ৮১.৭৬ শতাংশ বিতরণ করা হলেও দ্বিতীয় মেয়াদের ১০ মাসে এই ঋণ বিতরণ হয়েছে মাত্র ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।

একইভাবে প্রথম মেয়াদে ছোট শিল্পে ঋণ বিতরণের হার ছিল ৭৬.৯৩ শতাংশ। দ্বিতীয় মেয়াদের ১০ মাসে তা হয়েছে মাত্র ৪৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। জুলাই থেকে শুরু হওয়া এ ঋণ বিতরণ কার্যক্রমে ধীরগতিতে হতাশ ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। চলতি বাজেটে এটি শতভাগ বাস্তবায়নের কথা থাকলেও বছর শেষে হিসাব-নিকাশে ধীরগতির তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত বড় শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসাবে প্রথম মেয়াদে ৪০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল, যার বাস্তবায়নের হার ছিল ৮১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

তবে চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে দ্বিতীয় মেয়াদের ৩৩ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ বাস্তবায়ন শুরুর পর ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত এ খাতে বিতরণ হয়েছে মাত্র ১১ হাজার ৩২২ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা মোট প্যাকেজের ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত ১০টি প্রণোদনা তহবিল থেকে দুদফায় সব মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ ২১৮ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে শিল্প ও সেবা খাতের ৪৪ হাজার ২৬ কোটি টাকা, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ২৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকা, প্রি-শিপমেন্ট খাতে পুনঃঅর্থায়নে ঋণ গেছে ৬৫২ কোটি টাকা, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে ২ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ হয়েছে।

এ ছাড়া রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল থেকে ২৭ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা, এসএমই খাতের ঋণ নিশ্চয়তা স্কিম থেকে ৮৯ কোটি টাকা, রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা, গ্রাহকের সুদ ভর্তুকি বাবদ ১ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা ও কৃষি খাতের পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ৫ হাজার ৯০২ কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে। তবে পর্যটন খাতের হোটেল, মোটেল ও থিম পার্কের কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা তহবিল গঠন হলেও কোনো ঋণ বিতরণ হয়নি।

মহামারি কোভিড ১৯-এর কারণে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের নির্দেশনায় মোট ২৮টি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এসব প্যাকেজে অর্থের অঙ্ক দাঁড়ায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। পরে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) মাধ্যমে প্যাকেজটিতে যুক্ত হয় আরও ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে প্রণোদনা প্যাকেজের অঙ্ক ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার ১০টি প্যাকেজ বাস্তবায়ন হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে।